২২ এপ্রিল ২০২৫-এ জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওর বৈসারণ উপত্যকায় একটি মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলায় ২৮ জন নিহত হন এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হন। এই ঘটনার পরই ভারত সরকার একটি কড়া পদক্ষেপ নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা করে।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানকে সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ করে আসছিল ভারত। এবার সেই অভিযোগের জবাব দিতে ভারত সরকার ইন্দাস চুক্তি বাতিল করে জলনীতি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেন, “সীমান্তে সন্ত্রাস রুখতে কূটনৈতিকভাবে এবং বাস্তব পদক্ষেপে পাকিস্তানকে জবাব দিতে হবে। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসে লাগাম না দেয়, তবে চুক্তি পুনরায় চালু হবে না।”
১৯৬০ সালের এই চুক্তি, যা বিশ্বব্যাপী এক ঐতিহাসিক জলবণ্টন চুক্তি হিসেবে বিবেচিত, সেটিই প্রথমবার এইভাবে স্থগিত হল। ভারতের পশ্চিম দিকে প্রবাহিত সিন্ধু, ঝেলম ও চেনাব নদীর জল ব্যবহারে পাকিস্তানকে সুবিধা দেওয়া হয়েছিল এই চুক্তিতে। কিন্তু এবার ভারত জানিয়ে দিয়েছে, নিজেদের জলের ওপর পূর্ণ অধিকার বজায় রাখবে তারা।
পাকিস্তান ভারতের এই পদক্ষেপকে "জল যুদ্ধ" বলে বর্ণনা করেছে এবং এটিকে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন বলে অভিযোগ তুলেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জরুরি বৈঠক ডেকে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে অভিযোগ তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই ঘটনার ফলে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন মোড় নিতে পারে।